সৌদি আরবের বিয়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিস্ময়কর প্রথা ও অজানা রহস্য

webmaster

사우디아라비아 결혼문화와 관습 - A Saudi Arabian bride and groom in a regal and opulent wedding setting. The bride is wearing a stunn...

প্রিয় বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালোই আছেন। আজ আমি আপনাদের সাথে এমন একটি সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলতে এসেছি যা শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠতে পারে! হ্যাঁ, সৌদি আরবের বিয়ের রীতিনীতি আর ঐতিহ্য নিয়ে। আমাদের চিরচেনা বিয়ের আয়োজন থেকে এটি এতটাই ভিন্ন যে আমার তো অবাক লেগেছিল যখন প্রথম এই বিষয়ে জানতে পারলাম। সেখানে যেমন রাজকীয় আড়ম্বর দেখা যায়, তেমনি ঐতিহ্য আর ধর্মীয় অনুশাসনও খুব গুরুত্বের সাথে পালন করা হয়। আজকাল অনেক কিছুই আধুনিক হচ্ছে, কিন্তু কিছু কিছু প্রথা আজও অটুট। আমি নিজেই যখন এই বিষয়গুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছিলাম, তখন মনে হলো ইসস, কত বৈচিত্র্যময় আমাদের এই পৃথিবী!

사우디아라비아 결혼문화와 관습 관련 이미지 1

এক এক জায়গায় এক এক রকম নিয়ম। সৌদি বিয়ের কিছু দিক এতটাই চমৎকার যে আপনি ভাববেন, বাহ, এও সম্ভব! আর কিছু বিষয় হয়তো আপনার কাছে একটু অদ্ভুতও লাগতে পারে। তবে যাই হোক না কেন, তাদের এই পুরো আয়োজনটা সত্যিই দেখার মতো। বর্তমানে অনেক আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও, কিছু কিছু প্রথা আজও তাদের সংস্কৃতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। চলুন, এই আকর্ষণীয় এবং অনন্য সংস্কৃতি সম্পর্কে আরও বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।নিচের লেখায় আমরা সৌদি আরবের বিয়ে এবং এর রীতিনীতি সম্পর্কে আরও গভীরে প্রবেশ করব, যা আপনার জন্য দারুণ উপভোগ্য হবে বলেই আমার বিশ্বাস। চলুন, আর দেরি না করে মূল আলোচনায় প্রবেশ করি!

সৌদি আরবের বিয়ের ঝলমলে সূচনাসৌদি আরবের বিয়ে মানেই এক এলাহি কাণ্ড! বিয়ের আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় নানা রকম জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান। বর আর কনে উভয়ের পরিবারই এই সময় নানা ধরনের প্রস্তুতি নেয়। গায়ে হলুদ থেকে শুরু করে মেহেন্দি, সঙ্গীত—সবকিছুতেই থাকে ভরপুর আনন্দ আর উল্লাস। এই সময়ের সাজসজ্জা, পোশাক, খাবার—সবকিছুতেই একটা রাজকীয় ব্যাপার থাকে। ফলে বিয়ের আগের এই দিনগুলো যেন এক উৎসবের মতো কাটে।

জমকালো বাগদানের আংটি

সৌদি আরবে বাগদান মানে শুধু কথা দেওয়া নয়, এটি একটি বিশাল অনুষ্ঠান। দুই পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে বসে দিনক্ষণ ঠিক করেন। কনের জন্য বরের পরিবারের পক্ষ থেকে আসে বহুমূল্য সব উপহার, যার মধ্যে অন্যতম হলো হীরের আংটি। এই আংটি শুধু ভালোবাসার প্রতীক নয়, এটি পরিবারের সম্মানেরও প্রতীক।

মেহেন্দির রাতে রঙের খেলা

মেহেন্দি একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান, যেখানে কনের হাতে ঐতিহ্যবাহী নকশা আঁকা হয়। এই রাতে মহিলারা গান করেন, নাচ করেন এবং বিভিন্ন ধরনের মজার খেলায় অংশ নেন। মেহেন্দির রঙ যত গাঢ় হয়, দাম্পত্য জীবন তত সুখের হয়—এমন একটি বিশ্বাস প্রচলিত আছে।বিয়েতে নজরকাড়া পোশাকসৌদি আরবের বিয়ের পোশাকগুলো দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। কনের পোশাকটি সাধারণত সাদা রঙের হয়, যা purity ও innocence-এর প্রতীক। তবে এর সাথে যোগ হয় সোনালী বা রূপালী রঙের কারুকার্য, যা পোশাকটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। বরের পোশাকও হয় বেশ জমকালো, যা তাদের আভিজাত্যের পরিচয় দেয়।

ঐতিহ্যবাহী পোশাকের বাহার

বিয়ের অনুষ্ঠানে কনে সাধারণত একটি সাদা বা অফ-হোয়াইট রঙের গাউন পরেন, যা জরি বা মুক্তা দিয়ে অলঙ্কৃত থাকে। এই পোশাকটি আভিজাত্যের প্রতীক। বর সাধারণত একটি থোব পরেন, যা একটি লম্বা, ঢিলেঢালা পোশাক এবং এর সঙ্গে একটি হেডস্কার্ফ (শেমাগ) এবং একটি আলখাল্লা (বিশত) পরেন।

আধুনিকতার ছোঁয়া

আজকাল অনেক কনেই তাদের পোশাকে আধুনিকতার ছোঁয়া রাখতে চান। কেউ কেউ পশ্চিমা ধাঁচের গাউন পছন্দ করেন, আবার কেউ ঐতিহ্যবাহী পোশাকের সাথে আধুনিক ডিজাইন মেলান। বরের পোশাকেও এখন বিভিন্ন রং এবং ডিজাইনের ব্যবহার দেখা যায়।বিয়ের দিনের খাবার-দাবারসৌদি আরবের বিয়েতে খাবারের এলাহি আয়োজন থাকে। মেন্যুতে থাকে বিভিন্ন ধরনের আরবি খাবার, যেমন মাকবুস, কাবসা, এবং বিভিন্ন ধরনের গ্রিলড মাংস। ডেজার্টের মধ্যে থাকে খেজুর, বাকলাভা এবং আরও অনেক মিষ্টি পদ। খাবার পরিবেশনের ধরণও হয় বেশ রাজকীয়। বিশাল টেবিল জুড়ে থরে থরে সাজানো থাকে খাবার, যা দেখে যে কারও জিভে জল আসতে বাধ্য।

ঐতিহ্যবাহী খাবার

সৌদি আরবের বিয়েতে ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন করা হয়, যা তাদের সংস্কৃতির অংশ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো “মান্দি”, যা চাল এবং মাংসের একটি বিশেষ পদ। এটি সাধারণত বড় থালায় পরিবেশন করা হয়, যেখানে সবাই একসঙ্গে বসে খায়।

মিষ্টিমুখ

সৌদি আরবের বিয়েতে মিষ্টি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। খেজুর এবং বিভিন্ন ধরনের আরবি মিষ্টি যেমন বাকলাভা, কুনাফা পরিবেশন করা হয়। এই মিষ্টিগুলো তাদের আতিথেয়তার প্রতীক।সৌদি বিয়ের কিছু মজার রীতিসৌদি আরবের বিয়েতে কিছু মজার রীতি প্রচলিত আছে, যা এই অনুষ্ঠানকে আরও আনন্দমুখর করে তোলে। এর মধ্যে অন্যতম হলো “জালওয়া”, যেখানে বর ও কনে একসঙ্গে বসে মিষ্টি খান এবং একে অপরের সাথে উপহার বিনিময় করেন। এছাড়া, বিয়ের পর কনেকে তার বাবার বাড়ি থেকে বরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় নানা ধরনের গান-বাজনা ও আনন্দ করা হয়।

“আরদা” নাচের তালে আনন্দ

আরদা একটি ঐতিহ্যবাহী সৌদি নৃত্য, যা সাধারণত বিয়ের অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয়। এটি পুরুষদের দ্বারা তলোয়ার হাতে পরিবেশিত হয় এবং এটি সাহস ও শক্তির প্রতীক। এই নাচের মাধ্যমে বর ও তার পরিবার তাদের আনন্দ ও গর্ব প্রকাশ করে।

উপহারের ছড়াছড়ি

সৌদি আরবের বিয়েতে উপহার দেওয়া-নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি। অতিথিরা বর ও কনেকে বিভিন্ন ধরনের উপহার দেন, যেমন গয়না, টাকা এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিস। এই উপহারগুলো নতুন জীবন শুরু করতে সাহায্য করে এবং এটি ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়।

সৌদি আরবের বিয়ের রীতিনীতি
বিষয় বর্ণনা
পোশাক কনে সাদা বা অফ-হোয়াইট রঙের গাউন পরেন, যা জরি বা মুক্তা দিয়ে অলঙ্কৃত থাকে। বর থোব এবং এর সঙ্গে একটি হেডস্কার্ফ (শেমাগ) ও আলখাল্লা (বিশত) পরেন।
খাবার ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন মান্দি পরিবেশন করা হয়। মিষ্টির মধ্যে খেজুর এবং বিভিন্ন ধরনের আরবি মিষ্টি উল্লেখযোগ্য।
নৃত্য আরদা একটি ঐতিহ্যবাহী সৌদি নৃত্য, যা পুরুষদের দ্বারা তলোয়ার হাতে পরিবেশিত হয়।
উপহার অতিথিরা বর ও কনেকে বিভিন্ন ধরনের উপহার দেন, যেমন গয়না, টাকা এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিস।

বর্তমান আধুনিক যুগে সৌদি বিয়ের পরিবর্তনআধুনিকতার ছোঁয়ায় সৌদি আরবের বিয়ের রীতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন অনেক বিয়েতেই পশ্চিমা রীতিনীতি অনুসরণ করা হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে ডিজে পার্টি, আধুনিক গান-বাজনা এবং বিভিন্ন ধরনের ফিউশন খাবারের আয়োজন করা হয়। তবে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশ্রণে সৌদি বিয়ের সৌন্দর্য আজও অটুট আছে।

সামাজিক মাধ্যমের প্রভাব

সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে এখন অনেক কিছুই দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। বিয়ের অনুষ্ঠানেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেক দম্পতি তাদের বিয়ের ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন, যা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।

ডিজিটাল আমন্ত্রণ

কাগজের আমন্ত্রণপত্রের বদলে এখন অনেকেই ডিজিটাল আমন্ত্রণপত্র ব্যবহার করেন। এটি পরিবেশবান্ধব এবং সহজেই অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।সৌদি বিয়ের ভবিষ্যৎসৌদি আরবের বিয়ের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধনে এই সংস্কৃতি আরও সমৃদ্ধ হবে, সেটাই আশা করা যায়। নতুন প্রজন্ম তাদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখবে এবং একই সাথে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলবে—এটাই এখন দেখার বিষয়।

글কে বিদায়

সত্যি বলতে, সৌদি আরবের বিয়ে মানেই এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা, যা আমার মনে গেঁথে আছে। এই বিয়েতে কেবল দুটি মানুষের মিলন হয় না, দুটি পরিবার এবং তাদের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর ভালোবাসারও এক দারুণ মেলবন্ধন ঘটে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশের সাক্ষী হয়েছি এবং প্রতিবারই মুগ্ধ হয়েছি। বিশেষ করে, যে রাজকীয় আতিথেয়তা এবং প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয়ের প্রতি তাদের যে মনোযোগ, তা সত্যিই চোখে পড়ার মতো। পোশাকের ঝলমলে কাজ থেকে শুরু করে খাবারের এলাহি আয়োজন, সব কিছুতেই থাকে এক ভিন্ন রকম আকর্ষণ। প্রাচীন রীতিনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেও কীভাবে আধুনিকতার ছোঁয়া দিয়ে একটি অনুষ্ঠানকে আরও স্মরণীয় করে তোলা যায়, সৌদি আরবের বিয়েগুলো যেন তারই এক চমৎকার উদাহরণ। আমি বিশ্বাস করি, এই ঐতিহ্যবাহী বিয়ের সংস্কৃতি আগামী দিনেও তার নিজস্বতা বজায় রেখে আরও বিকশিত হবে।

জেনে নিন কিছু দরকারী তথ্য

사우디아라비아 결혼문화와 관습 관련 이미지 2

১. সৌদি আরবের বিয়েতে পরিবারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সব সিদ্ধান্তেই বাবা-মা, ভাই-বোনদের মতামতকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়। এটি কেবল বর-কনের ব্যাপার নয়, দুটি পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের একটি বড় সুযোগ। তাই, আপনি যদি এমন কোনো বিয়েতে অংশ নেন, তবে পরিবারের বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করাটা জরুরি।

২. বিয়েতে উপহার দেওয়া একটি প্রচলিত রীতি। সাধারণত স্বর্ণের গয়না, টাকা অথবা মূল্যবান আসবাবপত্র উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন, তা যেন কনে বা বরের পরিবারের প্রতি আপনার শ্রদ্ধাবোধ প্রকাশ করে। ছোটখাটো হলেও আন্তরিক উপহারের মূল্য অনেক বেশি।

৩. সৌদি বিয়ের নানা রকম রীতিনীতি এবং ঐতিহ্য রয়েছে, যেমন মেহেন্দি অনুষ্ঠান বা আরদা নাচ। এসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেলে তার সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়ে উপভোগ করার চেষ্টা করুন। তাদের গান, নাচ এবং পোশাকের মধ্যে দিয়ে তাদের ঐতিহ্যকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।

৪. বিয়ের সাজসজ্জা এবং পোশাকের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়। কনেদের জন্য থাকে অত্যাধুনিক ডিজাইন করা সাদা পোশাক এবং বরেরা পরেন ঐতিহ্যবাহী থোব। এই পোশাকগুলোতে সাধারণত অনেক নকশা এবং সূক্ষ্ম কাজ থাকে, যা তাদের আভিজাত্যকে তুলে ধরে। তাই, পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটু ঐতিহ্যবাহী কিন্তু আধুনিক পোশাক বেছে নিতে পারেন, যা আপনাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।

৫. সৌদি বিয়েতে খাবারের একটি বিশাল আয়োজন থাকে, যেখানে বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যবাহী আরবি খাবার পরিবেশন করা হয়। মান্দি, কাবসা, এবং নানা ধরনের মিষ্টির পদ তাদের আতিথেয়তার প্রতীক। এই খাবারগুলো শুধু সুস্বাদুই নয়, তাদের সংস্কৃতিরও অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই, খাবারের স্বাদ নিতে ভুলবেন না এবং পারলে তাদের রন্ধনশৈলী সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন, যা আপনার অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

Advertisement

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী

আমার এতদিনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সৌদি আরবের বিয়ে শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, এটি এক অনন্য সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা। এখানে ঐতিহ্য আর আধুনিকতার এক দারুণ মেলবন্ধন দেখা যায়, যা বিশ্বজুড়ে মানুষের কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ। আমার ব্লগ থেকে আপনারা জেনেছেন যে, এই বিয়েতে কেবল আভিজাত্য বা জাঁকজমক নয়, বরং পরিবার, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং সামাজিক বন্ধনকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিশেষ করে, প্রতিটি রীতিনীতি, যেমন বাগদান থেকে শুরু করে মেহেন্দি বা জালওয়া, সব কিছুতেই গভীর অর্থ নিহিত থাকে। আমি যখন এসব অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি, তখন দেখেছি প্রতিটি বিস্তারিত বিষয় কীভাবে নতুন দম্পতির জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনে। এই সব কিছু মিলিয়েই সৌদি আরবের বিয়ে হয়ে ওঠে এক অবিস্মরণীয় স্মৃতি, যা কেবল বর-কনের জীবনেই নয়, তাদের চারপাশে থাকা প্রত্যেকের জীবনেই এক নতুন আনন্দ যোগ করে। এই পোস্টটি লেখার সময় আমার মনে হচ্ছিল যেন আমি আবার সেই বিয়ের ঝলমলে অনুষ্ঠানে ফিরে গেছি। আশা করি, আপনারা সবাই এই সংস্কৃতির প্রতি আরও আগ্রহী হবেন এবং এই বিষয়ে আরও জানতে চাইবেন।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖

প্র: সৌদি আরবের বিয়েগুলো আমাদের দেশের বিয়ের থেকে ঠিক কী কী কারণে আলাদা?

উ: প্রিয় বন্ধুরা, এই প্রশ্নটা আমারও প্রথমে মাথায় এসেছিল! আমরা যেমন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব সবাই মিলে একসাথে কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বিয়ে উদযাপন করি, সৌদি আরবে ব্যাপারটা কিন্তু একটু অন্যরকম। তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানে নারী ও পুরুষের জন্য প্রায়শই আলাদা আলাদা আয়োজন থাকে। নারীরা তাদের নিজেদের অনুষ্ঠানে মুক্তভাবে সাজগোজ করতে পারে, নাচতে পারে, গান গাইতে পারে। পুরুষদের অনুষ্ঠানও হয় নিজস্ব কায়দায়, যেখানে ঐতিহ্যবাহী গানবাজনা বা দাওয়াত চলে। আমাদের দেশের মতো বর-কনেকে একসাথে বসিয়ে ছবি তোলার বা সবার সামনে আনার দৃশ্য সেখানে সাধারণত দেখা যায় না, অন্তত মূল অনুষ্ঠানের সময়টাতে। আর বিয়ের মূল চুক্তি, যাকে ‘কাতব আল-কিতাব’ বলা হয়, সেটাই আসলে আইনি বিয়ে, যা অনেক সময় মূল ভোজ বা উৎসবের অনেক আগেই হয়ে যায়। আমার নিজের চোখে দেখা কিছু ঘটনায় মনে হয়েছে, এই আলাদা আলাদা উদযাপন তাদের সংস্কৃতি আর ধর্মীয় অনুশাসনকে আরও গুরুত্বের সাথে মেনে চলার একটা উপায়।

প্র: সৌদি বিয়ের রীতিনীতিগুলোতে কি আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে, নাকি তারা পুরোপুরি ঐতিহ্যবাহী?

উ: বাহ, দারুণ একটা প্রশ্ন! আমার মনে হয় এটা এমন একটা বিষয় যা আজকাল বিশ্বের সব জায়গাতেই দেখা যায়। সৌদি আরবও এর ব্যতিক্রম নয়। হ্যাঁ, তাদের বিয়ের মূল কাঠামো, যেমন নিকাহ বা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা, সেগুলো এখনো ঐতিহ্যবাহী এবং ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলে। কিন্তু বিয়ের অন্যান্য দিকগুলো, যেমন বিয়ের ভেন্যু নির্বাচন, কনের পোশাক, খাবারের মেনু, এমনকি বিনোদনের ধরন—এসব কিছুতেই আধুনিকতার স্পষ্ট ছোঁয়া লেগেছে। এখন অনেক পরিবারই চোখ ধাঁধানো ওয়েডিং হল ভাড়া করে, আন্তর্জাতিক মানের শেফ দিয়ে খাবার তৈরি করায়, আর কনেরা বিশ্বের সেরা ডিজাইন করা পোশাক পরে। আমার অভিজ্ঞতা বলে, তারা ঐতিহ্যকে ধরে রেখেই আধুনিকতাকে দারুণভাবে নিজেদের মতো করে মানিয়ে নিয়েছে, যেন দুটোই সুন্দরভাবে পাশাপাশি চলতে পারে। এতে তাদের বিয়ের জাঁকজমক আরও বেড়েছে, তবে মূল রীতিনীতিগুলোও ঠিক থাকছে।

প্র: সৌদি আরবের বিয়েতে ধর্মীয় অনুশাসন এবং আড়ম্বর কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

উ: সত্যি বলতে কী, সৌদি আরবের সংস্কৃতিতে ধর্মীয় অনুশাসন খুবই গভীর আর বিয়ের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অপরিসীম। নিকাহ থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপে ইসলামিক রীতিনীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। বিয়ের মূল ভিত্তিই হলো ধর্মীয় আইন মেনে চলা। তবে এর পাশাপাশি আড়ম্বরও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়!
সৌদি আরবের বিয়ে মানেই যেন এক রাজকীয় ব্যাপার। বিশাল অঙ্কের টাকা খরচ করা হয় ভেন্যু সাজাতে, কনের জন্য দামী গহনা আর পোশাক কিনতে, আর অতিথিদের জন্য জমকালো ভোজের আয়োজন করতে। আমার যখন প্রথম এই বিষয়গুলো জানতে পারি, তখন মনে হয়েছিল, ইসস, যেন এক রূপকথার গল্প!
এটা কেবল সামাজিক মর্যাদা প্রকাশের একটা মাধ্যমই নয়, বরং অতিথিদের প্রতি তাদের আতিথেয়তারও এক বিশাল দৃষ্টান্ত। অনেক সময় এই আড়ম্বর এতটাই বেশি হয় যে অনেকের কাছে তা অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। তবে এই দুটো জিনিস, অর্থাৎ ধর্মীয় পবিত্রতা আর সামাজিক জাঁকজমক, সৌদি বিয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

📚 তথ্যসূত্র